যারা স্কলারশিপ পেতে চান।
তুরস্কের ধর্মমন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত তুর্কি দিয়ানাত ফাউন্ডেশনের স্কলারশিপ নিয়ে জিজ্ঞাসা📚📚📚
প্রতি বছর আবেদনের সময়টাতে ছাত্রছাত্রীদের আবেদন প্রক্রিয়া ও স্কলারশিপ আনুষাঙ্গিক বিভিন্ন প্রশ্ন থাকে। তাই কথা না বাড়িয়ে মূল কথায় চলে আসি।
পয়েন্ট অনুযায়ী তথ্য দিতে চাই——
১। এই স্কলারশিপটা কি?
এটি তুরস্কের দিয়ানাত ফাউন্ডেশনের গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রজেক্ট। তারা নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সামনে নিয়ে প্রতি বছর বৃহৎ আকারে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ছাত্র নিয়ে আসে। তারই ধারাবাহিকতায়, বাংলাদেশ থেকেও ছাত্রছাত্রীরা এই স্কলারশিপে তুরস্কে আসে।
দিয়ানাত ফাউন্ডেশনের স্কলারশিপ সাধারনত দুটি লেভেলে প্রদান করা হয়। যেমনঃ
ক. স্কুল লেভেল। (৯ম শ্রেণি)
খ. অনার্স লেভেল।
প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকেও স্কুল ও অনার্স লেভেলে তারা ছাত্রছাত্রী নিয়ে আসছে।
২। পেয়ে গেলেন, তারপর কি কি সুযোগ-সুবিধা থাকছে:
ক. হোস্টেল: এখানে ছাত্রছাত্রীদের জন্য থাকা-খাওয়া সম্পূর্ন ফ্রি।
খ. সরকারী হেলথ ইন্সুরেন্স
গ. স্কুল ও ইউনিভার্সিটি টিউশন ফি।
ঘ. মাসিক বৃত্তি বাবদ স্কুল লেভেলে ১৫০ লিরা ও অনার্সে ৫০০ লিরা। প্রতি বছর দুইবার অতিরিক্ত ২৫০ লিরা বই ও আনুষাঙ্গিক খরচ বাবদ প্রদান করা হয়।
ঙ. দিয়ানাত ফাউন্ডেশনের স্কলারশিপের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এখানে প্রথমবার আসা সহ প্রতিবছর দেশে আসা-যাওয়ার টিকেট তারা প্রদান করে থাকে।
চ. প্রথম এক বছর (৯ মাস) ফ্রি তুর্কি ভাষা শিক্ষা কোর্স।
ছ. বছরের বিভিন্ন সময় তুরস্কের বিভিন্ন দর্শনীয়স্থান পরিদর্শনের সুযোগ।
জ. এখানে পৌছানোর পর হতে এডমিশনের সকল কাজ দিয়ানাত করে দিবে।
ঝ. দিয়ানাত ফাউন্ডেশনের রয়েছে নির্দিষ্ট ডর্মেটরির ব্যবস্থা।
৩। আবেদনের সময়কাল:
আবেদন প্রতি বছর ফেব্রুয়ারী মাস থেকে শুরু হয়ে প্রায় একমাস চলমান থাকে। এই সময়ের মধ্যে যেকোন দিন আবেদন করা যাবে। একসাথে পুরো আবেদন শেষ করতে হবে এরকম কোন শর্ত নেই। প্রথম দিন শুরু করে শেষ দিনও কমপ্লিট করতে পারেন।
৪। যে সাবজেক্টে অনার্স প্রোগ্রামঃ
দিয়ানাত ফাউন্ডেশন প্রতি বছর শুধুমাত্র ইসলামিক স্টাডিজ ও থিওলজি বিষয়েই অনার্স করার সুযোগ দেয়। অন্য কোন ফ্যাকাল্টিতে পড়ার সুযোগ নেই।
৫। আবেদন করতে কি কি থাকা দরকার:
ক. স্কুল লেভেলের জন্য JSC বা JDC পরীক্ষার সার্টিফিকেট ও মার্কশীট সহ জন্মনিবন্ধন।
খ.অনার্সের জন্য আবেদন করতে আপনার এসএসসি/দাখিল এবং এইচএসসি/ আলিম পরীক্ষায় নুন্যতম ৭০% মার্ক থাকতে হবে।
মনে রাখবেন নূন্যতম মার্ক থাকলেই আবেদন করা যায়, কিন্তু স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য ভালো মার্ক সহ আরো কয়েকটি বিষয় থাকা জরুরী। সামনের পয়েন্টগুলোতে আরো বিস্তারিত পাবেন।
৫। বয়সসীমা:
-স্কুল লেভেলের জন্য আবেদন করতে সর্বোচ্চ বয়স ১৬ বছর বা তার কম হতে হবে।
-অনার্সের জন্য আবেদন করতে সর্বোচ্চ বয়স ২১ বছর বা তার কম হতে হবে।
৬। কাগজপত্র কি কি প্রস্তুত রাখবেন:
ক. পাসপোর্ট। আর পাসপোর্ট না থাকলে জন্ম সনদ অথবা জাতীয় পরিচয় পত্রের ইংরেজি কপি।
খ. সকল একাডেমিক পরীক্ষার সার্টিফিকেট
গ. সকল একাডেমিক পরীক্ষার ট্রান্সক্রিপ্ট
- স্কুল লেভেলে জেএসসি বা জেডিসি।
- অনার্সের জন্য এসএসসি বা দাখিল এবং এইচএসসি বা আলিম
ঘ. সদ্যতোলা পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
ঙ. রেফারেন্স/ রিকমেন্ডেশন লেটার। কমপক্ষে একটা অ্যাকাডেমিক হওয়া লাগবে। অ্যাকাডেমিক ছাড়াও অন্য কারো থেকে নিতে পারেন। রেফারেন্স লেটার একের অধিকও দিতে পারেন।
* এইচএসসি বা আলিম দিয়েছেন রেজাল্ট এখনো হয়নি অথবা এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষে আছেন। এমতাবস্তায়, প্রিন্সিপাল থেকে লিখিত সার্টিফিকেট নিয়ে আবেদন করা যাবে।
৭। স্কলারশিপ পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক:
মনে রাখবেন তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে IELTS গ্রহন করা হয়না। তুর্কি মাধ্যমে পড়ার জন্য কোন ধরনের ইংরেজি সার্টিফিকেট ছাড়া আবেদন করতে পারবেন।
স্কলারশিপ শুধুমাত্র রেজাল্টের উপর ভিত্তি করে দেয়া হয় না। সমপরিমান রেজাল্ট অনেকেরই থাকে। সবার থেকে আপনাকে যেটা আলাদা করবে তা হলো এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিস। মাদরাসা অথবা স্কুল,কলেজজীবনে যত ধরনের ভলেন্টিয়ারিং কাজে অংশগ্রহন করেছেন সব দিবেন। এর কোন সীমাবদ্ধতা নেই। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে অর্জিত সার্টিফিকেটও দিতে পারেন।
৮। আবেদন কিভাবে এবং কার সহায়তা নিয়ে করবেন:
স্কলারশিপ আবেদন পুরোটা অনলাইনে করতে হয়। এই লিংকে
https://diyanetburslari.tdv.org
গিয়ে আপনার ব্যক্তিগত মেইল দিয়ে একটা একাউন্ট খুলে ফেলবেন। তারপর যেসব তথ্যাবলি চাইবে সেগুলো দিয়ে একের পর এক পূরন করবেন। যেটা পূরন করবেন অটো সেইভ হয়ে যাবে, তাই চিন্তা করবেন না।
একদিনে বা এক বৈঠকে করতে হবে এরকম কোন নিয়ম নেই। আপনি একদিন এক অংশ করেন। চাইলে পুরো মাস ব্যাপী করতে পারেন। খুব ভালো করে পড়ে যথাযথভাবে করবেন।
৯। লেটার অব ইনটেন্ট কি:
খুব সহজ ভাবে বললে Personal Statement, Statement of Purpose অথবা Personal Essay যাই বলনু না কেন সব লেটার অব ইনটেন্ট। অনার্স লেভেলে যারা পার্সনাল স্টেটমেন্ট অথবা পার্সনাল এসে (Essay) লিখেন সেটাই আপনাদের লেটার অব ইনটেন্ট।
স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য রেজাল্টের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো লেটার অব ইনটেন্ট।
অনার্সের জন্য সহজ সরল ভাষায় লিখবেন, কি করতে চান! ভবিষ্যতে কি করবেন! কেন তুরস্ক! এসব সুন্দর করে প্রশ্ন অনুযায়ী লিখবেন। তাদের পছন্দ হলে এটাই হয়ে যেতে পারে আপনার স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরের জন্য সীমাবদ্ধতা থাকবে। সেটার প্রতি অবশ্যই খেয়াল রাখবেন।
১০। লেটার অব ইনটেন্ট কিভাবে লিখবেন:
প্রথমে দেখে নেই তুরস্কের সরকারি বৃত্তির আন্ডারগ্রাজুয়েট/পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রার্থীদের লেটার অব ইনটেন্ট বা পার্সোনাল স্টেটমেন্ট এর Prompt কেমন:
“In this section, it is expected to explain following details: your academic and social experiences relating the field you want to take an education, your reasons for choosing Turkey for study and the importance of your future plans for your education and scholarship in Turkey. You can write a letter of intent in the language you can express yourself.”
পুরো Prompt এ যে বিষয়গুলোকে আপনার লেটারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে সেগুলো হল:
ক. আপনি যে বিষয়ে অনার্স করতে চান সে বিষয় সম্পর্কিত আপনার অ্যাকাডেমিক এবং সামাজিক অভিজ্ঞতা।
খ. উচ্চশিক্ষার জন্য তুরস্ককে কেন পছন্দ করলেন।
গ. আপনার ডিগ্রী বা শিক্ষা এবং তুরস্কের বৃত্তির জন্য আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার গুরুত্ব।
মাথায় অনেক কিছু, কিন্তু লিখে শেষ করতে পারেননি। সমস্যা নেই এখানে মাথায় বাকি যা আছে লিখে ফেলেন। অবশ্যই প্রোডাকটিভ কিছু লিখবেন।
১১। রেফারেন্স লেটার কার থেকে নিবেন এবং কতটা নিবেন:
আবেদনের জন্য একটি রেফারেন্স/ রিকমেন্ডেশন লেটার বাধ্যতামূলক। তবে দুই বা তার অধিকও হতে পারে। মিনিমাম দুটো দেওয়া ভালো। এক্ষেত্রে আপনার প্রতিষ্ঠান প্রধান থেকে নিলে ভালো হয়।
যেহেতু অনার্সের জন্য শুধু থিওলজিতেই অনার্সের সুযোগ পাবেন,তাই এই বিষয়ে আবেদনের ক্ষেত্রে ওই বিষয়ে অথরিটি আপনাকে সুযোগ দিলে ভবিষ্যতে কি কি করতে পারবেন। সংক্ষেপে এসব লিখতে পারেন।
যার থেকেই নেন তাদের মোবাইল নাম্বার ও ইমেইল এড্রেস লিখতে হবে। অথরিটি আপনার রেফারিকে মেইল করতে পারে। এতে উনার রিপ্লে দিতে হবে।
১২। তুর্কি ভাষা কি শিখতেই হবে:
এই স্কলারশিপ পাওয়া মানে আপনাকে প্রথম বছর তুর্কি ভাষা শিখতেই হবে। স্কুল এবং অনার্স লেভেল, সবারই শেখা বাধ্যতামূলক।
★ অনার্সের জন্য প্রথম বছর তুর্কি ভাষা শেখার পরে দ্বিতীয় বছরে এক বছরের আরবি ভাষা কোর্স করতে হবে। যদি আরবি ভাষার উপর যোগ্যতা থাকে, তাহলে ভাষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সরাসরি ফ্যাকাল্টিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে এক বছর আরবি কোর্সের প্রয়োজন নেই।
১৩। লিখিত পরীক্ষা এবং ভাইবা কেমন হবে:
দিয়ানাতের লিখিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে তারা ২০ মার্কের একটি আইকিউ টেস্ট ও তারপর ভাইবার জন্য ডাকা হয়।
আবেদনের প্রায় ২ মাস পর ভাইভার জন্য ডাকবে। ভাইভাতে ডাক পাওয়া মানে সবেমাত্র শুরু।এতে স্কলারশীপ অথরিটি আপনার সাবজেক্ট/ ফিল্ড রিলেটেড কিছু প্রশ্ন করবে। এবং আবেদনের সময় আপনি যে সকল ডকুমেন্টস আপলোড করেছেন সেগুলোর মুলকপি দেখতে চাইবে। ভাইভা ইংরেজি ভাষায় হয়, তবে আপনি ইংরেজিতে দূর্বল হলে বাংলাতে দিতে পারবেন। একজন দোভাষী থাকবে। ইংরেজিতে দিতে পারলে ভালো। নতুবা আপনার দুর্বলতা প্রমান পাবে। না পারলে পরে অর্ধেক গিয়ে আটকা পরার চাইতে ইংরেজিতে না বলা ভালো।
সমসাময়িক বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইবে। আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা। এসব নির্ধিধায় উত্তর দেওয়া লাগবে।
ভাইভা দিয়ে বের হওয়ার সময় ফাইনাল রেজাল্ট কখন দিবে সেটাও বলে দিবে।
১৫। কোন কনসালটেন্সি দিয়ে আবেদন করলে স্কলারশিপ পাবেন:
প্রশ্নই আসেনা। কারো সহযোগিতা ছাড়া নিজে নিজে আবেদন করবেন।
অনেকে এসব করে লক্ষ্য-লক্ষ্য টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। নিয়মিত প্রতারণা হচ্ছে। যতদূর পারবেন তাদের থেকে দূরে খাকবেন। আপনি আবেদনের সময় কোন সমস্যার মুখোমুখি হলে সরাসরি এই গ্রুপে গিয়ে সিনিয়রদের পরামর্শ নিন। গ্রুপে ডুকে প্রথমে ফাইল অপশনে গিয়ে সব ফাইল পড়বেন। ওখানে না পাওয়া গেলে প্রশ্ন করবেন। নিজের আবেদন নিজে করার মধ্যে কল্যাণ আছে।
১৬। স্কলারশিপ পাওয়ার পর তুরস্কে আসতে কত টাকা খরচ হতে পারে:
এই স্কলারশিপ প্রাপ্তদের ভিসা ১০০% পাওয়া যায়। শুধুমাত্র মেডিকেল করা, ভিসা এপ্লাই সহ ১২ হাজার টাকার মতো লাগবে, এছাড়া আর কোথাও টাকা লাগবেনা।
ভিসা দেওয়ার পর ইমেইলে বিমানের টিকেট পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
১৭। তুরস্কে আপনাকে কারা সহযোগিতা করবে:
আপনি স্কলারশিপ প্রাথমিক রেজাল্ট পাওয়ার পর থেকে শুরু করে ইন্টারভিউ, ভিসা প্রসেসিং, টিকেট পাওয়া ,
এয়ারপোর্টে রিসিভ করা, হোস্টেলে পৌছিয়ে দেওয়া, ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি করানো এবং রেসিডেন্স পারমিট সহ সব কিছুতেই দিয়ানাত আপনাকে সহযোগিতা করবে। এসবের জন্য আপনার জন্য চিন্তা করতে হবেনা।
১৮। তুরস্কে বাংলাদেশীদের অবস্থান:
বর্তমানে প্রায় সাত শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী পড়ালেখা করেন। এর মধ্যে অর্ধেক ইস্তানবুলে আর বাকীরা আনকারা, কনিয়া, বুরসা, কায়সেরী, সাকারিয়া, খোজায়লি, এসকিশেহির, পামুক্কালে, ইসপারতা, এরজুরুম, ইজমির এবং ট্রাবজন সহ আরে কিছু শহরে। প্রতি বছর একটা সংখ্যা আসতেছেন আবার অনেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করে তুর্কি ত্যাগ করে কেউ ইউরোপে আবার কেউ দেশে চাকুরীতে জয়েন করছেন।
বাংলাদেশী কমিউনিটির বিভিন্ন প্রোগ্রাম উপলক্ষে এবং
আনকারায় বাংলাদেশ এ্যাম্বাসী আর ইস্তানবুলে কনস্যুলেট এর বিভিন্ন ইভেন্টে সবাই একসাথে হওয়ার সুযোগ হয়। কিছু ব্যবসায়ী, চাকুরীজীবি, ডাক্তার, ইউনিভার্সিটি শিক্ষক এবং ফ্যামিলি আছেন এদের বড় একটি সংখ্যা ইস্তানবুলে বসবাস করেন। আরো কিছু বাংলাদেশী আছেন যারা নব্বইয়ের দশকে এসেছেন, পড়ালেখা শেষ করে এখানেই স্যাটেলড এবং পাশাপাশি তুরস্কের নাগরিকত্ব পেয়েছেন।
১৯। বিস্তারিত যেখানে পাবেন:
ক. Turkey Diyanet Scholarship for Bangladeshi Students
https://www.facebook.com/groups/602109100682420/?ref=share
খ. স্কলারশিপ আবেদনের লিংক:
https://diyanetburslari.tdv.org
সবার জন্য শুভ কামনা
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ